বাংলাদেশের রিক্সা আর্ট - বৈশাখী

-
সকালে আটতলা থেকে নেমে দেখি ঢাকার রাস্তা জুড়ে যত না বিদেশি গাড়ির বাহার তার সাথে সমান তালে রিক্সা। আমি কলকাতা থেকে কিছু দূরের শহরতলির মানুষ। রিক্সা আগে দেখিনি এমন নয় তবে এখানে  রিক্সা রীতিমতো রূপসী।





রঙরেখার ভিন্ন এক মাত্রা রয়েছে রিক্সাগুলির নির্মাণ জুড়ে। উজ্জ্বল রঙে আঁকা ছবিগুলির বিষয় খুবই বৈচিত্র্যময়। কখনো নায়ক-নায়িকা, কখনো বা পৌরাণিক কাহিনির কোনো অংশ। আবার, এরশাদের আমলে রিক্সার গায়ে মানুষের ছবি আঁকা বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে – সিংহ বা বাঘ রাস্তার গাড়ি
সামলাচ্ছে এমন ছবিও দেখা যায়। খুব ভালোভাবে দেখলে বোঝা যায় সমসাময়িক সময় এবং সমাজ খুব স্পষ্টভাবে ছবিগুলিতে ধরা আছে। শিল্পের সমস্ত শাখাতেই  নিজস্ব সময় থেকেই রঙ খুঁজে নেন শিল্পী।




আঁকা-জোকার বিষয়ে ওয়াকিবহালরা বলেন ছবিগুলির তুলির আঁচড় খুবই সাবলীল। রিক্সাশিল্পীদের কেউই কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে শিক্ষিত নন। মূলত দেশজ শিল্পের মতোই নিজের আগ্রহ এবং চেষ্টার মাধ্যমে কিছু মানুষ এইসব চিত্র আঁকেন। বলা বাহুল্য নাগরিক চোখে এঁরা তথাকথিত নীচু তলার মানুষ।


রিক্সা চিত্রশিল্পীদের তুলির টানে সিটের পিছনে  শুধুই ছবি নয় মাঝে মাঝে একটুকরো রসিকতাও আঁকা হয়ে যায় – ‘জন্ম থেকেই চলেছি ‘ বা ‘ধাক্কা দিলে খবর আছে তোর’। সময় যখন কান টেনে ধরে আর আপনি ‘এই রিক্সা যাবে?’ বলে ডাক দেন তখন এসব দেখেশুনে ব্যস্ততার মধ্যে একটু হাসি উপহার পান না কি?

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

সুডুকু মেলানোর উপায়- নীলেশ

-
Image
'Sudoku'(সুডোকু) আমাদের কাছে অতি পরিচিত এক নাম, আমরা প্রায় নানান রকম নিউজ পেপার, ম্যাগাজিন এ সুডোকু নামের খেলাটা দেখতে পাই, বর্তমানে এটার জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় এখন অনেক মোবাইল গেমসেও একে দেখা যাচ্ছে. এখন বর্তমান প্রযুক্তিতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন থেকেও এই খেলাটি খেলতে পারা যায়। সুডোকু কিছুই না এটি একটি সংখ্যা মেলানোর খেলা। এই নামটি উৎপত্তি হয়েছে জাপান এ, জাপানী ভাষায় 'সু' মানে সংখ্যা এবং 'ডোকু' মানে একক, কিন্তু মজার ব্যাপার হলো এই খেলাটির উৎপত্তি কিন্তু জাপানে নয়, এই খেলাটির উৎপত্তি হয়েছে সুইজারল্যান্ড এ। এখন দেখে নেওয়া যাক খেলাটি কিরকম, এই খেলায় পাশাপাশি এবং লম্বা-লম্বি ভাবে 9 টি 9 টি করে মোট 81 টি ঘরের ছক কাটা থাকে, আবার এই পুরো ছকটাকে পাশাপাশি এবং লম্বা-লম্বি ৩ টি ৩ টি করে 9 টি ঘরের এক-একটি বর্গক্ষেত্র বানিয়ে মোট 9 টি বর্গক্ষেত্রে ভাগ করা হয়ে থাকে, এবং এটি দেখতে এরম হয়। এই খেলাটা ১ থেকে 9 সংখ্যার খেলা তাই 9 টি ঘর কাটা থাকে। এবার জেনে নি এই খেলার নিয়ম কি কি - ১. একই লাইনের পাশাপাশি অথবা লম্বা-লম্বি ঘরে একই সংখ্যা দুইবার বসবে না। 2. 9 টি ছোটো ছো...
Read more

খিস্তি সুখের উল্লাসে- নীলাদ্রি

-
Image
একদম ছোটবেলা থেকেই ছড়ার কোলে মানুষ হয়েছি আমরা । সেইসব সহজ , প্রাণোচ্ছল এবং প্রায়শই মজার মজার ছড়াগুলো ছিল আমাদের বাইবেল , কোরান , বেদ সবকিছু । যখন নিজে পড়তে শিখিনি , তখনই মা , জেঠিমাদের মুখ থেকে শুনে শুনে মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল ' ঘুম পাড়ানি মাসি পিসি ' বা ' আয় আয় চাঁদমামা ' ধরণের ছড়াগুলো । এরপর একে একে ' তাই তাই তাই / মামাবাড়ি যাই ' বা ' বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর '- এর মতো ছড়া এক নিঃশ্বাসে বলতে শিখি । তাছাড়া বাড়িতে কোনো আত্মীয় এলে মা বাবা দাদু দিদাদের গর্বিত করার জন্য তারস্বরে চেঁচিয়ে ' আতা গাছে তোতা পাখি ' থেকে শুরু করে ' ব্যা ব্যা ব্ল্যাকশিপ ' কিংবা ' খোকা গেল মাছ ধরতে ' পারফর্ম করতে হতো ! ছড়া আমাদের লোকসাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অবিভক্ত বাংলার প্রত্যন্ত সব এলাকা থেকে অজস্র ছড়া সংগ্রহ করেছিলেন । ছোটবেলায় পড়া ছড়াগুলো নিয়ে তিনি শিশুর মতোই উচ্ছ্বসিত ছিলেন । আর তাঁর নিজের লেখা প্রতিটি ছড়াই যে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ছড়াগুলোর অন্যতম , তা বলাই বাহুল্য । একদম ছোটবেলায় পড়া...
Read more

তোত্তো-চান : 'তোমোই গাকুয়েন' - একটি প্রকৃত বিদ্যালয় - শতাব্দী

-
Image
মৌসুমী ভৌমিকের অবদান "নতুন স্কুলের গেটখানা দেখা-মাত্র তোত্তো-চান থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো। আগের স্কুলের গেটে,ভারি সিমেন্টের থামের উপরে স্কুলের নামটা বড় বড় অক্ষরে লেখা ছিলো। তোত্তো-চান দেখলো যে এই স্কুলের গেটটা অনেক নিচু,আর তার ওপর অনেক ডালপালা,লতাপাতা এসে পড়েছে। হাওয়ায় স্কুলের নাম লেখা বোর্ডটা একটু সরে গিয়েছিলো। তাই কাছাকাছি পৌঁছনোর পর তোত্তো-চানকে বেশ ঘাড় কাত করে নামটা পড়তে হলো। 'তো-মো-ই গা-কু-য়ে-ন। 'ও কি স্বপ্ন দেখছে? 'মা, ওটা কি একটা সত্যিকারের রেলগাড়ি? ওই যে স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে আছে?' সকালের সূর্যের আলোতে রেলগাড়ির জানালাগুলো চকচক করছিলো। কিন্তু ছোট্ট যে মেয়েটা ওই গাড়ির দিকে অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে ছিলো,তার মুখটা যেন ঐ জানালার চেয়েও বেশি চকচক করছিলো।" বাতিল রেলগাড়ির কামরাগুলি এক একটি ক্লাস রুম। শুনেই বিস্ময় জাগে,ঠিক তোত্তো-চানের মতোই। যেন এ এক স্বপ্নলোকে বিচরণ,কল্প জগতের ইস্কুল-বাড়ি।তাই হেড-মাস্টার মশাই তোত্তো-চানের মতো ছোট্ট মেয়ের কাছে হয়ে যান স্টেশন-মাস্টার।গাছপালা ঘেরা,খোলা মাঠ,লতাপাতা জড়ানো স্কুলের গেট,গাছে গাছে ফুলে ফুলে ভরা চারপাশ।অফিস-বাড়ির...
Read more