Posts

জামালপুরের মেলা : অশ্লীলতা ও অমানবিকতা - শতাব্দী

Image
বর্ধমানের পাটুলির জামালপুর গ্রামে বুদ্ধ-পূর্ণিমা কে কেন্দ্র করে বুড়োরাজ শিবের পুজো হয়। এই পুজো উপলক্ষে "ভক্ত"দের পরনে থাকে লাল পোষাক ; হাতে তরোয়াল , রাম দা , খাঁড়া , টাঙ্গি , তাসা প্রভৃতি বাজনা সহ তারা উৎসবে অংশগ্রহণ করে । সঙ্গে থাকে ভেড়া / ছাগল। যদিও শিব পূজায় বলির প্রচলন নেই । কথিত আছে, স্থানটি তে শিব ও মা চন্ডী সহাবস্থান করেন। দেবী চন্ডীর উদ্দেশেই চলে এই বলি।              প্রতি বছর বিভিন্ন পূর্ণিমায় যেমন - বৈশাখী পূর্ণিমা , জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা , মাঘি পূর্ণিমা ও বুদ্ধ পূর্ণিমা তে এখানে "ভক্ত" সমাগম ঘটে। তাদের উৎসবের আনন্দ খানিকটা এরকম ----- জামালপুরের মেলা : অশ্লীলতা ও অমানবিকতা কাটা ভেড়া রক্ত মাখা , সারা দেহে রক্ত-ছাপ। সবার মাঝে বিভৎসতা নারকীয় অত্যাচার । নারী শরীর বড্ড প্রিয় বড্ড প্রিয় রক্ত ঘ্রাণ । মানুষ ভাবতে ঘেন্না হয় নিষ্ঠুর এ মানব প্রাণ। ফূর্তি করে অস্ত্র হাতে ফূর্তি করে উল্লাসে। ফূর্তি আনে মৃত্যু যখন নাচে সবাই মহোল্লাসে। উৎসব শেষে ফিরতি পথে ধ্বংস করে জাতির নাম। ডুবতে থাকে লাল জলেতে জীবন যেন অন্ধ দান। কথিত আছে , বহু ...

'অন্ধের স্পর্শের মতো' : এক অনুচ্চকিত অনুভবের উপাখ্যান -নীলাদ্রি

Image
সেদিন দূরপাল্লার বাসে করে ফিরছি। সিট পেয়েছি একদম সামনে। কিছুক্ষণ পর থেকেই হর্ণের তীব্র আওয়াজে কান ভোঁ ভোঁ করতে শুরু করলো। বাড়ি ফেরার পর দু'তিন দিন লেগেছিল কানের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে! মনে আছে কলেজ ফেস্টে স্টেজ জোড়া সাউন্ড বক্সের প্রবল নিনাদের মধ্যে কাটিয়ে এসেও একই অবস্থা হতো। তবে এসব তো গেল শরীরের কানের কথা! আর মনের কান? মনের যে কানটি আমাদের তৈরি করে নিতে হয় অল্পে অল্পে, সেটা কি সবসময় সুস্থ থাকে? সুস্থ থাকতে আদৌ পারে? যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা আধুনিক থেকে উত্তর আধুনিক পেরিয়ে ক্রমশ এক উন্মাদ আধুনিকতার দিকে ছুটছি বলে মনে হয়! যত দিন যাচ্ছে, আমরা যেন ততই কেমন লাউড আর স্থূল হয়ে যাচ্ছি! সর্বত্র শুধু 'আমি'-র ছড়াছড়ি! চিৎকার করে ছাড়া কেউ কথাই বলতে পারছি না! আর সত্যি বলতে কী, চিৎকার না করলে কারো কানে কথা পৌঁছে দেওয়াও যাচ্ছে না! চাদ্দিকে এই কোলাহলের মধ্যে পড়ে যখন ভেতর থেকে হাঁপিয়ে উঠছি, ঠিক তখনই সামনে দেখি এক আশ্চর্য জাদুর তোরণ! যার মধ্য দিয়ে স্বচ্ছন্দে পৌঁছে যাওয়া গেল এক শান্তির উপত্যকায়! বইটির নাম 'অন্ধের স্পর্শের মতো'। প্রণবেশ সেন স্মারক সভায় কবি শঙ...

শহর- বৈশাখী পাল

Image
শহর তোমার রূপের ঝলক্ পুড়িয়েছিলো ভীষণ ভোরে । আসমানি রং খুঁজতে গিয়ে একলা হলাম সেই অকালে ।। তোমার গানের ভৈরবী সুর পায়ের ধুলো মেঘলা পুকুর ।। শহর তুমি গল্প একা , কৈ মাছের ওই ভীড়ের ভিতর । শহর তোমায় খুঁজতে গিয়ে মনজোছোনা চাপানউতোর ।। শহর তুমি মানিকতলা , বাজারমুখী আঁশটে বাসা । শহর তুমি নষ্ট শশা , গলির কোনে কলার খোসা ।। শহর তুমি কলেজপাড়া , বই এর দোকান আসুন দাদা । শহর তুমি ব্যবসায়ী মন , দর কষাকষি গোলকধাঁধা ।। শহর তুমি ইলশেগুড়ি , প্রেমযাপনের চারটে আঙুল্ ।। শহর তুমি রঙীন ফানুস , পায়ে হাঁটা পথ চলতে থাকুক । শহর তুমি কামাই ক্লাসের গল্পজ্বরের   বাবুঘাটে , সেল্ফি মোডে ফুচকাগাড়ি আজও কেমন দাঁড়িয়ে থাকে ! শহর তুমি বিষন্নতা , একলা চড়াই প্রেম দিলে না । শহর তুমি তাকিয়ে দ্যাখো , তোমার কোলেই নির্যাতিতা । শহর তুমি প্রতিবাদের ঝড় তোলা সেই মোমবাতি । ফেসবুকেতেই কাঁপন তোলো , লাইক্ করার মাতলামি ! শহর তুমি বাড়ছো যতো , বিজ্ঞাপনেরই বাড়ছে স্থূপ । কংক্রীটেতে ঘুড়ি বেঁধে যায় , ভেলকি দেখায় মরণকূপ ।। শহর তুমি একটা ঋতু , হলদে আলোর ব্যস্ততা । মাঘ ফাগুনের ধূসর ফুলে রোদ পোড়া এক...

আমি ও লজ্জাবতী সংবাদ -শতাব্দী

Image
কী খবর , কেমন আছো না বলে সরাসরি কাজের কথায় চলে যাওয়াই আধুনিক রীতি । মানুষ বড় ব্যস্ত । তাই মুহূর্তও সময়ের অপচয় করে না । যদিও দীর্ঘদিন পর যখন লজ্জাবতীর সাথে পথ চলতে দেখা হল , মনের মধ্যে গুজগুজ করা প্রশ্নগুলি ভাষা পেল কিছুটা এভাবে -- কীসের এত লজ্জা তোমার থাকো তো পরে পথের পাশে অবহেলার অবগাহনে গুটিয়ে যাও কেন এক পরশে ! লজ্জাবতী শোনাই তবে প্রাণের কথা বন্ধু হয়ে শোনো যদি , মনের মতো সঙ্গী পেলে আমিও রাজার ঘরে বিরাজি । লজ্জা কি আর সাধে আসে মা যদি গো এমন সাজায় তার ওপরে কথা বলা সে কি আর আমায় মানায় ! আমি :   অনেক গুণ নাকি তোমার কত রোগের ঔষধি । এমন কোনো ওষুধ তোমার জানা আছে নাকি ! লজ্জা কাটিয়ে তুমি কেবল শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকো , সবাই কে বলবে হেসে দেখো তো দেখি ছুঁয়ে এখন । লজ্জাবতী : জানো তো সবই লীলার কথা বলব আমি কী , তুমিও বোঝো আমিও বুঝি হাসেন অন্তরযামী ।

খিস্তি সুখের উল্লাসে- নীলাদ্রি

Image
একদম ছোটবেলা থেকেই ছড়ার কোলে মানুষ হয়েছি আমরা । সেইসব সহজ , প্রাণোচ্ছল এবং প্রায়শই মজার মজার ছড়াগুলো ছিল আমাদের বাইবেল , কোরান , বেদ সবকিছু । যখন নিজে পড়তে শিখিনি , তখনই মা , জেঠিমাদের মুখ থেকে শুনে শুনে মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল ' ঘুম পাড়ানি মাসি পিসি ' বা ' আয় আয় চাঁদমামা ' ধরণের ছড়াগুলো । এরপর একে একে ' তাই তাই তাই / মামাবাড়ি যাই ' বা ' বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর '- এর মতো ছড়া এক নিঃশ্বাসে বলতে শিখি । তাছাড়া বাড়িতে কোনো আত্মীয় এলে মা বাবা দাদু দিদাদের গর্বিত করার জন্য তারস্বরে চেঁচিয়ে ' আতা গাছে তোতা পাখি ' থেকে শুরু করে ' ব্যা ব্যা ব্ল্যাকশিপ ' কিংবা ' খোকা গেল মাছ ধরতে ' পারফর্ম করতে হতো ! ছড়া আমাদের লোকসাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ । স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অবিভক্ত বাংলার প্রত্যন্ত সব এলাকা থেকে অজস্র ছড়া সংগ্রহ করেছিলেন । ছোটবেলায় পড়া ছড়াগুলো নিয়ে তিনি শিশুর মতোই উচ্ছ্বসিত ছিলেন । আর তাঁর নিজের লেখা প্রতিটি ছড়াই যে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ছড়াগুলোর অন্যতম , তা বলাই বাহুল্য । একদম ছোটবেলায় পড়া...